সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্ব

hparvez.me

প্রযুক্তির এই ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত ডেভেলপ হচ্ছে। বছর দশেক আগেও যেখানে মানুষ ইমেইল, চিঠি আদান প্রদান, ফোনালাপ, কিংবা ফ্যাক্স মেশিন ব্যবহার এর মাধ্যমে মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করত, আজ সে জায়গার অনেকাংশ দখল করে নিয়েছে নানাবিধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির অংশ হিসেবে বহুল ব্যবহৃত সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, ভাইবার, লিংকডিন অন্যতম।

আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। খুলে গেছে ই-কমার্সের দুয়ার। ই-কমার্সের ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে। করোনার কারনে এই অগ্রগতি বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে।

এই করোনার কারনে যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকের নিজের নিত্যপ্রয়োজনীয় নানাবিধ পণ্য কিনতে দোকান, মার্কেটে যেতে পারেন না। তাদের এই ব্যস্ত জীবনে আশার আলো হয়ে এসেছে ই-কমার্স। বিভিন্ন নামী-দামী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কিংবা ছোটখাট ব্যবসায়ীদের বেঁচে থাকার অবলম্বন এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যার ফলে তারা নিজেদের বিক্রয়যোগ্য পণ্যের প্রচারণা সোশ্যাল ডিসটেন্সিং মেনে ক্রেতাদের নিকট পৌঁছে দিতে পারেন। 

এই করোনার কারনে বহু বেকার তরুণ উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে ঝুঁকছে। যার ফলে অনেকেই এখন অনলাইন ব্যবসামুখী হচ্ছে ও সফলতার মুখ দেখছে। শুধুমাত্র চাকুরির জন্য ব্যতিব্যস্ত না হয়ে বিকল্প পথ হিসেবে ধীরে ধীরে নিজের অনলাইন ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে পারলে পরবর্তীতে চাকরিদাতা হয়ে উঠা সম্ভব। প্রতিটি ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব পড়ছে।

ছাত্রজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এর প্রভাব ব্যাপক। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ এর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এর মত যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের ফেসবুক কমেন্ট, পোস্টিং কোনো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা বা মূল্যবোধের পরিপন্থী হলে ওই স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ভর্তির সুযোগ পাবে না। আগে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর, রিপোর্ট কার্ড, পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম ইত্যাদি বিবেচনা করা হতো ভর্তির সময়। এখন সময় বদলেছে, পশ্চিমা বিশ্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সময় ভর্তিচ্ছুদের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।  নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও দেখা হচ্ছে।  আমাদের দেশেও এমনটি হতে চলেছে।

তাই ছাত্রছাত্রী/তরুণদের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা, অনেক বেশি সময় এক্ষেত্রে ব্যয় না করা, ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা এবং উদ্ভাবনীমূলক ও নিজেকে কি ভাবে স্কিলফুল করা যায় সে দিকে নজর দেয়া।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এত ইতিবাচক দিক থাকার পরেও এর অপব্যবহার এবং তার ফলে সৃষ্ট নেতিবাচক ঘটনা বেশ উদ্বেগজনক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই কোন আলোচিত ঘটনার প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে ‘গুজব’ ছড়িয়ে যাওয়া এখন বেশ নিয়মিত। তাই কোন তথ্য শেয়ার বা কমেন্ট করার আগে নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে যাচাই করে ঘঠনমূলক কমেন্ট করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *